ড্রাই ও ড্যামেজ হেয়ার রিপেয়ার করতে ২ টি ইজি সল্যুশন
বাইরের ধুলোবালি, রোদ, পল্যুশনে চুল রাফ ও ফ্রিজি হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। রেগুলার হেয়ার কেয়ারে শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার তো ব্যবহার করছেন, তারপরও চুলের জন্য প্রয়োজন একটু এক্সট্রা কেয়ার। সুন্দর, কোমল ও সিল্কি চুল পেতে প্রাকৃতিক উপাদানের হেয়ার প্যাক বা মাস্ক খুবই ভালো কাজ করে।
তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন চুলে মাস্ক অ্যাপ্লাই করা উচিত। জানি, এই ব্যস্ত জীবনে আমাদের হাতে এত সময় নেই যে এটা ওটা মিক্স করে চুলে লাগাবো! তবে সপ্তাহে মাত্র ৩০ মিনিট বের করা কঠিন কিছু না। ড্যামেজ ফ্রি চুল পেতে এইটুকু সময় তো দিতেই হবে, তাই না?
ড্রাই ও ড্যামেজ হেয়ার রিপেয়ারের ইজি ও শর্টকাট সল্যুশন দেখে নিন তাহলে!
হেয়ার ড্যামেজ কেন হয়?
কোনো প্রবলেমের সল্যুশন পাওয়ার আগে জানতে হবে এর পেছনে কোন কোন কারণগুলো দায়ী। অনেক সময় প্রোপারলি যত্ন নেওয়ার পরও চুলের ফ্রিজিনেস কমতেই চায় না। রেগুলার লাইফের কোন ভুলগুলোর কারণে চুল ড্যামেজ হচ্ছে, সেটা ফাইন্ড আউট করাটা জরুরী। চলুন তাহলে এক নজরে দেখে নেই কোন কোন ফ্যাক্টর এর সাথে জড়িত।
১) পুষ্টির অভাব
চুল হচ্ছে এক প্রকারের মৃতকোষ, তাই চুল কাটলে আমাদের ব্যথা লাগে না। শরীরের সব চাহিদা মিটিয়ে নিউট্রিয়েন্টস এই কোষগুলোতে পৌঁছে। চুল পুষ্টি পায় গোড়া থেকে আর চুলের সুস্থতা নির্ভর করে আপনার ডায়েটের উপর। জিংক, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, প্রোটিন এই উপাদানগুলোর ঘাটতি হলে চুলেও নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়ে।
২) হিট প্রোটেকটর ছাড়াই চুলে তাপ দেওয়া
রেগুলার বেসিসে অনেকেই চুলে স্ট্রেইটনার ইউজ করেন। হিট প্রোটেকটর সিরাম বা স্প্রে ছাড়া সরাসরি যখন এই হিট চুলে দেওয়া হয়, তখন চুলের স্বাভাবিক ময়েশ্চার লেভেল বা আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যায়। দিনের পর দিন এভাবে ব্লো ড্রাই, কার্লিং বা হেয়ার স্টাইলিং করা হলে চুল খুব তাড়াতাড়ি ড্যামেজ হয়ে যায়।
৩) ওভার ওয়াশিং করা
হার্শ কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পুর অতিরিক্ত ব্যবহার চুল রুক্ষ করে দেয়, এটা আমরা কম বেশি সবাই জানি। প্রয়োজনের অতিরিক্ত চুল ধোয়া হলে ন্যাচারাল অয়েলও ওয়াশ আউট হয়ে যায়। শ্যাম্পুর পর চুলের ময়েশ্চার লক করতে কন্ডিশনিং করাও জরুরী। কিন্তু অনেকেই কন্ডিশনার স্কিপ করে যান। আর এই কারণে চুল ফ্রিজি ও ড্রাই হয়ে যায়!
৪) ভুল প্রোডাক্ট সিলেকশন
হেয়ার টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট সিলেক্ট না করলে নিজের অজান্তেই চুলের বারোটা বেজে যাবে! যেমন ধরুন আপনার স্ক্যাল্প ড্রাই, কিন্তু আপনি এমন একটি শ্যাম্পু ইউজ করছেন যেটি চুল ও স্ক্যাল্পকে আরও ড্রাই করে দেয়। বেসিক্যালি সেটা অয়েলি হেয়ারের জন্য ফর্মুলেটেড, আপনার চুলের প্রয়োজন অন্যকিছু। তাহলে প্রোডাক্ট ভালো হলেও আল্টিমেটলি ক্ষতি কিন্তু আপনারই হচ্ছে।
এছাড়াও স্ট্রেস, চুলে তেল না দেওয়া, ভেজা চুল আঁচড়ানো, ঠিকমতো কেয়ার না করা, অদক্ষ হাতে চুলে কালার করানো এসব কারণে চুলের ক্ষতি হয়। এতক্ষণ তো অনেক কিছুই জানলাম ড্রাই ও ড্যামেজ হেয়ার নিয়ে, এবার আসি সল্যুশনে।
(১) নারিশিং হেয়ার মাস্ক
মাত্র ৩টি উপাদান দিয়ে ঝটপট বানিয়ে নেওয়া যায় নারিশিং হেয়ার মাস্ক! শুষ্ক ও রুক্ষ চুলের জন্য এই হেয়ার মাস্কটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে। এই উপাদানগুলো চুলে ময়েশ্চার ও নারিশমেন্ট প্রোভাইড করে, তাই চুলের রুক্ষতা দূর হয় খুব সহজে।
যা যা প্রয়োজন
আমলা পাউডার ৩ টেবিল চামচ
টকদই ২ চা চামচ
অলিভ অয়েল ১ চা চামচ
(২) প্রোটিন ট্রিটমেন্ট মাস্ক
চুলে ময়েশ্চার ও প্রোটিনের ব্যালেন্স ঠিকঠাক না থাকলে চুল রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে যায়, চুলের আগা ফাটার সমস্যা দেখা দেয়, চুল দুর্বল হয়ে যায়। তাই সপ্তাহে একদিন হেয়ার প্রোটিন প্যাক ইউজ করলে চুল হবে কোমল ও ঝলমলে।
যা যা প্রয়োজন
ডিম ১টি
টকদই ৩ চা চামচ
কলা ১টি
অ্যালোভেরা জেল ২ চা চামচ
মধু ১ চা চামচ
খুব ভালোভাবে এই উপকরণগুলো ব্লেন্ড করে চুলে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিটের জন্য। এরপর ধুয়ে ফেলুন মাইল্ড কোনো শ্যাম্পু দিয়ে। ব্যস, বাই বাই ফ্রিজি হেয়ার!
তাহলে দেখলেন তো সপ্তাহে মাত্র ৩০ মিনিট সময় দিলে ড্যামেজ হেয়ার নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। আপনার হেয়ার টাইপ যেমনই হোক না কেন, এই মাস্কগুলো ব্যবহার করতে পারবেন নিশ্চিন্তে। চুলের যত্ন নিতে অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন anayase.com থেকে ।